ঢাকা, শুক্রবার ০৩, মে ২০২৪ ১৯:২৮:৪৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করুক: প্রধানমন্ত্রী সবজির বাজারে স্বস্তি নেই যুদ্ধকে ‘না’ বলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছি ভারী বর্ষণে মহাসড়কে ধস, চীনে ২৪ প্রাণহানি রাজবাড়ীতে ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ

গুলাব কৌর, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বীর 

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৭:৪৭ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২৩ বৃহস্পতিবার

গুলাব কৌর, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বীর 

গুলাব কৌর, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বীর 

নাম তার গোলাপ বা গুলাব। ফুলের নামে নাম। ফুলের মত কোমল এই নারীই বৃটিশদের চোখের ঘুম হারাম করে দিয়েছিলেন। কে তিনি! পুরো নাম গুলাব কৌর, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক মহান বীর নারী।   

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বহু অপরিচিত মুখের মত এক মুখ গুলাব কৌর। এই অগ্নিকন্যা ছিলেন একজন ভারতীয় শিখ নারী। 

১৮৯০ সালে পাঞ্জাবের সাঙ্গরুর জেলার বকশিওয়ালা গ্রামে জন্ম তার। চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী খুব অল্প বয়সেই মান সিংয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আর পাঁচটা দম্পতির মত তারাও তাদের সুন্দর একটা ভবিষ্যতের আশায় দেশ ছেড়ে সুদূর ফিলিপিন্সের ম্যানিলা পাড়ি দিয়েছিলেন। সেই ম্যানিলার মাটিতে দাঁড়িয়েই গুলাব কৌর নামলেন তার দেশের মাটি রক্ষার লড়াইতে।

ম্যানিলাতে প্রথম তিনি সমসাময়িক গদর পার্টির কথা জানতে পেরেছিলেন। শিখ ও পাঞ্জাবীদের নিয়ে সংগঠিত এই দলটির এক এবং একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচার থেকে ভারতকে মুক্ত করা। সেই উদ্দেশ্য পূরণে সামিল হতে গুলাব কৌর সাংবাদিকের ছদ্মবেশে দলের সদস্যের অস্ত্র বিতরণের মত গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। শুধু তাই নয়, তিনি ম্যানিলাতে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়দের স্বাধীন ভারত গড়ার মন্ত্রে দীক্ষিতও করতেন। মজার বিষয় হল, দলের যে সদস্যরা সংগ্রাম থেকে পিছিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি নাটকীয়ভাবে তার বাঁ হাত থেকে চুড়ি খুলে বলতেন, “যদি কেউ মাতৃভূমির জন্য লড়াই করার এই বিরল সুযোগ থেকে পিছু হটে তবে তাদের এই চুড়ি পরে একপাশে বসা উচিত। আমরা মহিলারা তাদের জায়গায় লড়াই করব।” পরবর্তীকালে ভারতে ফিরেও তিনি তার শেষ নিঃশ্বাস অবধি দেশের জন্য লড়ে গেছিলেন।

ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার অপরাধে তাকে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের লাহোরে দুবছরের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়। বিপ্লবীদের বিষয়ে তথ্য জানানোর জন্য তার উপর প্রচন্ড নির্যাতনও করা হয়েছিল। তবুও অগ্নিযুগের অগ্নিকন্যা দাঁতে দাঁত চিপে সব অত্যাচার হজম করেছিলেন। ১৯৪১ সালে তার মৃত্যু হয়। দুঃখের বিষয়, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অংশগ্রহণের লড়াইয়ে তিনি পাশে পাননি তার স্বামীকে। ম্যানিলা থেকে স্বামীকে ছাড়াই তাকে ফিরে আসতে হয়েছিল দেশের মাটিতে। 

বলা বাহুল্য অগ্নিকন্যা গুলাব কৌরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়েছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক জ্বলন্ত অধ্যায়। এমনই কতশত বিপ্লবী যে আমাদের চোখের আড়ালে তাদের আত্মত্যাগ আর অদম্য সাহসিকতার পরিচয় রেখে গেছেন, তার আর হিসেব কোথায়!